গত কয়েক বছর যাবত আমি প্রোডাক্টিভিট বৃদ্ধি করার জন্য নিজের হ্যাবিট ও রুটিন যাচাই করে দেখছি। একটা অভ্যাস ঠিক করার কর অন্যটার উপর নজর দিচ্ছি। যেমন, বই লেখা অভ্যাস করছি এখন।
কিছু রিসার্চ করার পরে আমি হ্যাবিট বিল্ডিং থিওরির উপর আগ্রহী হই। সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে সবাই ডিজিটাল অ্যাডিকশনে ভুগছে।
SocialTimes এর মতে ১৮% সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার কয়েক ঘণ্টাও ডিসকানেক্টেড থাকতে পারেনা।
“18% of social media users can’t go a few hours without checking Facebook." - SocialTimes (Dec. 30, 2014)
এই আর্টিকেলে আমরা দেখবো হ্যাবিট বিল্ডিং প্রসেস কিভাবে ইন্টারফেস তৈরিতে কাজে লাগানো যায়।
কিউঃ এটা হচ্ছে হ্যাবিটের ট্রিগার। ট্রিগার কোন স্থান, সময়, দিন, ইমোশন বা যে কোণ কিছু হতে পারে।
রুটিনঃ কিউ এর প্রতিক্রিয়ায় যা করা হয়, তা হল রুটিন। এটা ফিজিক্যাল বা মেন্টাল হতে পারে। যেমন কফি পান করা, কোন তথ্য গুগলে সার্চ করা।
রিওয়ার্ডঃ এটা হচ্ছে রুটিনের বেনিফিট। এটা হচ্ছে সেই ফল যেটা লাভের জন্য ব্রেইন বার বার হ্যাবিট রিপিট করে। রিওয়ার্ড অনেক কিছুই হতে পারে - আনন্দ, এনার্জি, প্রশ্নের উত্তর ইত্যাদি।
“Habits are impulses to do behaviors with little to no conscious thought.”
নিচে HOOK মডেলের বর্ণনাকারী একটি গ্রাফিক্স দেয়া হল। নিরের গবেষণায় তিনি দেখেছেন যে ফেসবুক, লিংকডইন ও ইন্সটাগ্রামের মত বড় কোম্পানি কোটিকোটি মানুষের হ্যাবিট চেঞ্জ করার জন্য দায়ী।
চার্লস ডুহিগের মতে Trigger হচ্ছে হ্যাবিট এর কাজ শুরু করার কারণ। ট্রিগার ইন্টারনাল বা এক্সটারনাল হতে পারে। একাকীত্ব, স্ট্রেস, অনিশ্চয়তা ইত্যাদি ইন্টারনাল ট্রিগাস। অ্যাড, মেসেজ, আবহাওয়া ইত্যাদি এক্সটারনাল ট্রিগার।
Action হচ্ছে ট্রিগারের পরে করা কাজ। এটা ওয়েব স্ক্রোলিং, রিফ্রেশিং, ট্যাপিং, লাইক দেয়া ইত্যাদি হতে পারে।
Reward হচ্ছে যে ফলের আশায় কোণ মানুষ এই কাজ করে। এটা সম্মতি, সহমত, আনন্দ, ইনফরমেশন ইত্যাদি হতে পারে।
বেশি রিওয়ার্ড পেতে মানুষ যা বিনিয়োগ করতে রাজি, তা হচ্ছে Investment। যেমন, টাকা, ডাটা, সময়, সোশ্যাল ক্যাপিটাল।
ইনভেস্টমেন্ট থেকে অন্যান্য্য ট্রিগার তৈরি হয়। যাতে ইউজারের আসক্তি বাড়ে।
HOOK একটা এক্সপিরিয়েন্স ডিজাইন যেটা ইউজারের সমস্যা থেকে নিজের ব্যবসার সমাধান বের করে। নির আয়ালের ছবি।লিংকডইন HOOK ব্রেকডাউন Image by Nir Eyal.
লিংকডইনের সাড়ে ৩৪০ মিলিয়ন ইউজার থাকার কারণ হচ্ছে যে এটার হুক অনেক ভালো করে ডিজাইন করা। সবাই ভালো নেটওয়ার্কিং এর বেনিফিট পেতে চায়।
হ্যাবিট তৈরি ও চেঞ্জ করা
কেন ইউজারদের হ্যাবিট তৈরি বা পরিবর্তন করবেন? এর কিছু প্রধান কারণ হলঃ
হ্যাবিট কাস্টমারের লাইফটাইম ভ্যালু বৃদ্ধি করে
হ্যাবিট প্রাইসিং ফ্লেক্সিবিলিটি বৃদ্ধি করে
হ্যাবিট গ্রোথ বৃদ্ধি করে। Hooked ইউজাররা সহজে সার্ভিস ব্যবহার বন্ধ করে না
হ্যাবিট বিজনেস ডিফেন্স বৃদ্ধি করে। কোন চিন্তা ছাড়াই যখন কোন ইউজার আপনার প্রোডাক্ট ব্যবহার করে, তখন সে সহজে সেটা ব্যবহার বন্ধ করবে না।
কিভাবে ডিজিটাল হ্যাবিট তৈরি হয়?
বন্ধুদের বা সামাজিক চাপে, সোশ্যাল প্রেসারে। আগের দিনে মানুষ টিভি দেখে বড় হয়েছে। আজকাল মানুষ বড় হচ্ছে টুইটারের যুগে। যেমন আমি।
আশেপাশের সংস্কৃতি সব মানুষের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। সেটার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সকলে এই প্রেশার অনুভব করে। এটা আমাদের যুগের অনেক বড় একটা সমস্যা।
কেউ অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে পড়তে চায় না। আর এই প্রসেস অনেক স্লো কাজ করে। তাই চট করে কারো চোখেও পড়ে না।
এটা ইন্সটাগ্রাম কর!
যখন কেই একটা ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু করে, তখনই অটোমেটিকেলি সে নতুন হ্যাবিট তৈরি শুরু করে। হ্যাবিটের চক্র খুবই সহজ। একই চাহিদার জন্য একই কাজ বারবার করা, এরপর একই ফল বারবার পাওয়া। ভেবে দেখুন ইন্সটাগ্রাম করার হ্যাবিট কিভাবে ফর্ম হয়।
বার বার ব্যবহারে এরপর সেটা অভ্যাস অটোম্যাটিক হয়ে যায়। এরপর আর তা করার আগো। এই কাজ করা সহজাত প্রবৃত্তি হয়ে ওঠে। এটাই হচ্ছে হ্যাবিটের শক্তি।
কিউ সহজীকরণ
রিওয়ার্ডের জন্য কিউ এক্টিভেট করা কিয়াবে সহজ করা যায় ভাবুন। অনেক ওয়েবসাইট হোমপেজের হিরো সেকশনেই লগিন করার সেকশন বসিয়ে রাখে। আবার হোমপেজে লগিন ডাটা স্টোর করে রাখে, যেন লগিন অনেক সহজে করা যায়।
কিভাবে ইউজার হ্যাবিট আইডেন্টিফাই করবেন
এটি একটা কালচারাল অবসার্ভেশন।
দেখুন মানুষের আগ্রহ কিসে। কোন কাজ মানুষ বার বার করে। এই ব্যাপ্রে ডক্টর ডেভিড গ্রিনফিল্ড বলেছেনঃ
“Everyone feels like they lose track of time and space when they use the Internet,”
তিনি বলেন।
“That means that it’s psychoactive—in other words, it’s a digital drug.”
এই এক্সপিরিয়েন্সই আমাদের প্রোডাক্টের মাধ্যমে এচিভ করতে হবে।
একবার ইউজারদের হ্যাবিট আইডেন্টিফাই করে নিয়ে এরপর সেটা হুক মডেলে ব্রেকডাউন করতে হবে। যেমন মানুষের লাইক ও কমেন্ট অ্যানালাইজ করে দেখতে হবে।
তবে ইউজাররা আপনার সাইটে কি করছে সেটা বের করার চেষ্টা না করাই ভালো। ইউজেবিলিটি টেস্ট কন্ডাক্ট করুন। হাইপোথিসিস রেডি করুন।
A/B টেস্টিং এর জন্য একটি ফ্রি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন। এটায় টেস্টিং এর ট্র্যাকিং করা হয়।
কালার নিয়ে কাজ
সঠিক কালার ব্যবহার করতে শিখুন! কন্ট্রাস্ট সামান্য এদিক ওদিক করে নিয়ে ট্রিগার অনেক গুনে বাড়িয়ে ফেলা সম্ভব। এতে করে ইউজার থেকে কাস্টমার কনভার্শন রেট বাড়বে।
UsabilityTools.com এর পিটার কজরভস্কি একটা স্টাডিতে প্রমান করেছিলেন যে কালার পরিবর্তন না করে শুধু কন্ট্রাস্ট বদলেই কনভার্শন রেট বাড়ে। নিজের ডিজাইনে এমন কনট্রাস্ট ব্যবহার করা শিখে নিন।
এতে ক্লিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে সাইটে।
ব্যাকগ্রাউন্ড কালার ন্যাচারাল ও নিউট্রাল রাখুন। স্টুডিওপ্রেস তাদের থিমে ৩টি মূল কালার ব্যবহার করে। ব্যাকগ্রাউন্ড, বেস, একসেন্ট। ব্যাকগ্রাউন্ড ও বেস দুটি একসেন্টকে সাপোর্ট করে।
পরে কোন সাইট ভিজিট করলে অবশ্যই এই ব্যাপার গুলা খেয়াল করে দেখবেন।
ব্যাকগ্রাউন্ড কালারঃ সাইটের জেনারেল টোন ও ফিল সেট করে।
বেস কালারঃ এটা হচ্ছে ব্যাকগ্রাউন্ডের উপর বসা সাইটের ভিন্ন ভিন্ন ইলিমেন্টের মাঝের রঙ।
একসেন্ট কালারঃ এটা সাইটের সববচেয়ে কম ব্যবহৃত কালার। সাইটের কালার প্যালেট এক রঙের না হলে, একসেন্ট কালারটি ব্যাকগ্রাউন্ড ও বেস কালারের কন্ট্রাস্ট হিসেবে কাজ করে।
পরিশেষ
ভালো প্রোডাক্ট ডিজাইন করা সহজ কাজ নয়। যেমন, হ্যাবিট ডিজাইন। তাই নিয়মিত ইউজার গ্রোথের জন্য এমন স্ট্র্যাটেজি জরুরী। এই আর্টিকেলে আমরা দেখালাম কিভাবে হ্যাবিট ডিজাইন করতে হয়।
আশা করি এখান থেকে হ্যাবিট ডিজাইনের উপর অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আমার সাথে টুইটারে যোগাযোগ করতে পারেন এখানে @tomaslau.
Tomas Laurinavicius is a designer, marketer, blogger, marketing advisor at Devsolutely and co-founder of Best Writing, an all-in-one platform connecting writers with businesses.